কলকাতা বিমানবন্দর থানার পুলিশ বিমাবন্দরের এক নম্বর গেট থেকে প্রায় ৩০-৩৫ টন নিষিদ্ধ শব্দবাজি বাজেয়াপ্ত করেছে। গোপন সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার রাতে পুলিশ এক নম্বর গেট এলাকা থেকে একটি লরি আটক করে। ওই লরি তল্লাশি চালিয়ে বিপুল পরিমাণ শব্দবাজি বাজেয়াপ্ত করা হয়। লরির চালক জহিরুল হককে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে, লরিটি বারুইপুরের চম্পাহাটি থেকে আসছিল এবং বেলঘড়িয়া এক্সপ্রেসওয়ে ধরে আসামের দিকে যাচ্ছিল। লরির চালককে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা গেছে যে এই বিপুল পরিমাণ নিষিদ্ধ শব্দবাজি আসামের উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। ধৃত লরিচালককে আজ ব্যারাকপুর আদালতে পেশ করা হয়।
এগরার পর এবার বজবজ। পূর্ব মেদিনীপুরের পর এবার দক্ষিণ ২৪ পরগনা। রবিবার রাতে বজবজের নন্দরামপুর দাসপাড়ায় বেআইনি বাজি কারখানার গোডাউনে বিধ্বংসি আগুন লেগে তিনজনের মৃত্যু হয় বলে জানা গিয়েছে। সূত্রের খবর, মা জয়শ্রী হাটি, মেয়ে পম্পা হাটি ছাড়া আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায়। জখম কয়েকজনকে আইএসআই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এদিন রাত আটটার একটু আগে এই ঘটনা ঘটে। দাউ দাউ করে আগুন জ্বলতে থাকে। জানা গিয়েছে, এই গ্রামে প্রতিটা বাড়িতেই কুটির শিল্পের মতো আতশ বাজি তৈরি হয়। ঘটনাস্থলের আশাপাশে চকোলেট বাজি পড়ে থাকতে দেখা গিয়েছে। এদিনই ঘটনার পর বিপুল পরিমান বাজি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। সেই বাজি নিয়ে যায় পুলিশ। এক ব্য়ক্তিকে আটক করেছে পুলিশ। গত মঙ্গলবার এগরার বাজি কারখানায় বিষ্ফোরণে ৯ জনের মৃত্যু হয়েছিল।
আগামীকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার বাজি ব্যবসায়ী সমিতিকে ডেকে পাঠানো হল নবান্নে। মুখ্যসচিব ও স্বরাষ্ট্রসচিবের সঙ্গে তারা বৈঠকে মিলিত হবেন বলে জানা গিয়েছে। এর আগে সমিতির তরফ থেকে বাবলা রায় মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে তাদের বিষয়টি বিবেচনা করার জন্য অনুরোধ করেন। সেখানে ৩১ লক্ষ মানুষের জীবন ও জীবিকা সংশয়ের বিষয়টি জানানো হয় । তারপরই মুখ্যমন্ত্রী বাজি ব্যবসায়ী সমিতির নেতাদের তলব করেন। আরও ্পড়ুন ঃ মতুয়া উন্নয়ন পর্যদের জন্য ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ মুখ্যমন্ত্রীর প্রসঙ্গত , চলতি সপ্তাহের মঙ্গলবারে কালীপুজো ও দিওয়ালিতে বাজি না পোড়ানোর জন্য অনুরোধ করা হয় সরকারের তরফ থেকে। কারণ , বাজি ফাটালে করোনা রোগীদের বিস্তর সমস্যা হতে পারে। এনিয়ে এদিন চিকিৎসক ও পরিবেশকর্মীদের সংগঠনগুলির তরফ থেকে রাজ্য সরকারকে চিঠি দেওয়া হয়। সেই চিঠিতে আবেদন করা হয় , এই বছর যেন বাজি বিক্রি ও বাজি পোড়ানো বন্ধ থাকে। চিঠিতে এই দাবি করা হয়েছে , বায়ু দূষণের জেরে কোভিড ৬ থেকে ৭ শতাংশ বেড়ে যেতে পারে।পৃথিবীতে করোনা সংক্রমণের জেরে যাদের মৃত্যু হচ্ছে , তার ১৫ শতাংশের মৃত্যুর কারণ বায়ু দূষণ। তাই দিওয়ালিতে বাজি পুড়লে তা করোনা সংক্রমণ বাড়ানো্র ক্ষেত্রে সহায়ক হতে পারে বলে মত চিকিৎসকদের। তাই বাজি বিক্রি ও বাজি পোড়ানো যতটা সম্ভব কম করা যায় , এদিনের চিঠিতে সেই আবেদনই করা হয়েছে।
চম্পাহাটির বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের জেরে তীব্র আতঙ্কের সৃষ্টি হল। স্থানীয়দের মতে, বুধবার বেলা ১২টা নাগাদ আচমকাই বিস্ফোরণের শব্দ পান। দৌড়ে গিয়ে দেখেন বাজি কারখানাটি দাউদাউ করে জ্বলছে। কালো ধোঁয়ায় ঢেকে গিয়েছে চতুর্দিক। মুহূর্তের মধ্যে আগুন ছড়িয়ে পড়তে থাকে। আজ যারা বাজি কিনতে গিয়েছিলেন , সকলকে নিরাপদ এলাকায় সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় দমকলের দুটি ইঞ্জিন। এছাড়াও বারুইপুর থানার পুলিশ আধিকারিকরাও খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান। বেশ কয়েক ঘণ্টার চেষ্টায় তারা আগুন নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে। আরও পড়ুন ঃ আজ দুদিনের রাজ্য সফরে অমিত শাহ প্রাথমিকভাবে অনুমান করা হচ্ছে , কারখানায় মজুত থাকা বাজি থেকেই এই বিস্ফো্রণের ঘটনা ঘটেছে। বিপুল পরিমাণে বাজি থাকায় দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনার জেরে এলাকাবাসী ব্যাপক আতঙ্কে রয়েছেন। সামনেই কালীপুজো। তার আগে এই বিস্ফো্রণের ঘটনায় কয়েক লক্ষ টাকার বাজি নষ্ট হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। কারখানায় অবৈধভাবে বাজি মজুত ছিল কিনা ও অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা সঠিকভাবে কাজ করছিল কিনা , তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
কোভিড পরিস্থিতিতে কালীপুজোয় বাজি পোড়ানোর বন্ধ রাখার আরজি জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠক করে রাজ্যের মুখ্য সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, আদালত নির্দেশিত নিষিদ্ধ বাজি তো বটেই, দয়া করে কেউ কোন বাজি ব্যবহার করবেন না। রোগীদের শরীরে বাজির ধোঁয়া থেকে মারাত্মক প্রভাব পড়তে পারে। তাই উৎসব সংযত এবং শান্তভাবে পালিত হবে। এছাড়াও ্জানানো হয় , কালীপুজোতে মাস্ক ব্যবহার আবশ্যিক। কালীপুজোর বিসর্জনে শোভাযাত্রা করা যাবে না। আরও পড়ুন ঃ তৃ্ণমূলের গোষ্ঠী্দ্বন্ধের লড়াইতে সাধারণ মানুষ খুন হচ্ছেঃ অর্জু্ন সিং এদিন রাজ্যের তরফে আরও জানানো হয়, দুর্গাপুজোয় অনেকে রাস্তায় বেরিয়ে ছিলেন তা সত্ত্বেও কোভিড সংক্রমণ ক্রমশ কমছে। মৃত্যু হার কমছে। সুস্থতা বাড়ছে। এসব ঘটনা রাজ্য সরকারকে আত্মবিশ্বাস যোগাচ্ছে। এমন আবহে যাতে রাজ্যবাসী সরকারকে সহযোগিতা করে সেই আবেদনও জানানো হয়। এদিন মুখ্যমন্ত্রী মুখ্য সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, রাজ্য পুলিশের ডিজি, কলকাতার পুলিশ কমিশনার-সহ নবান্নের শীর্ষ কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন।